সূর্যমুখী

সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম) বা পাথরের ফুল লাদাননিকভ পরিবারের একটি অস্বাভাবিক বার্ষিক বা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এই সংস্কৃতির 70 টিরও বেশি বিভিন্ন প্রজাতি ইউরোপীয় এবং এশিয়ান দেশগুলির পাশাপাশি আফ্রিকান এবং আমেরিকান মহাদেশগুলির প্রাকৃতিক পরিবেশে পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এর আশ্চর্যজনক ফুল, যা ভোরবেলা সূর্যের প্রথম রশ্মির সাথে খোলে এবং দুপুরে ভেঙে যায়।

সূর্যমুখী ফুলের বর্ণনা

একটি গুল্মজাতীয় বা আধা-ঝোপযুক্ত উদ্ভিদে একটি খাড়া বা লতানো কান্ড থাকে যার উচ্চতা 30 সেন্টিমিটারের বেশি হয় না, সরল হালকা সবুজ ডিম্বাকৃতির পাতা, রেসমোজ ফুলে হলুদ, কমলা, সাদা বা গোলাপী ফুল এবং ভিতরে বীজ সহ ফলের ক্যাপসুল থাকে।

ক্রমবর্ধমান সূর্যমুখী বীজ

বীজ বপন

বাড়িতে সূর্যমুখী চারা জন্মানো কঠিন নয়। গাছপালা, সঠিক যত্ন সহ, শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং একটি খোলা ফুলের বাগানে প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত হবে। বীজ বপনের জন্য একটি ভাল সময় হল মার্চের প্রথম দিন।

অভিজ্ঞ চাষীরা শুধুমাত্র পাত্র বা পিট ট্যাবলেট ব্যবহার করার পরামর্শ দেন, যেহেতু উদ্ভিদটি প্রতিস্থাপন এবং বাছাইয়ে খুব নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায়। এটি সব তার রুট সিস্টেমের উপর নির্ভর করে, যা নির্দিষ্ট ছত্রাকের সাথে ক্রমাগত মিথস্ক্রিয়ায় থাকে। যদি এই মিথস্ক্রিয়াটি প্রতিস্থাপন বা গুল্মটিকে কয়েকটি অংশে বিভক্ত করে বিরক্ত করা হয় তবে ফুলটি গুরুতর অসুস্থ হতে পারে এবং এমনকি মারা যেতে পারে।

পাত্রে একটি প্রাক-আদ্র, আলগা মাটির মিশ্রণে ভরা হয় এবং তাদের প্রতিটিতে দুই বা তিনটি বীজ রাখা হয়। বীজগুলি সূক্ষ্ম নদী বালির একটি পাতলা স্তর দিয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি স্বচ্ছ ফিল্ম দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

উত্থানের আগে, রোপণের পাত্রগুলিকে একটি উষ্ণ, খুব উজ্জ্বল ঘরে রাখা উচিত যার তাপমাত্রা প্রায় 25 ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রজাতি এবং বিভিন্নতার উপর নির্ভর করে, চারা এক বা এমনকি চার সপ্তাহের মধ্যে প্রদর্শিত হতে পারে। অবিলম্বে তার পরে, আবরণ ফিল্ম অপসারণ এবং 15-16 ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ একটি শীতল ঘরে বয়াম স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

তরুণ উদ্ভিদের উচ্চ-মানের এবং পূর্ণ বিকাশের জন্য, তাদের বিশেষ তাপমাত্রার অবস্থার প্রয়োজন হবে। দিনের তাপমাত্রা রাতের তুলনায় 4-5 ডিগ্রি বেশি হওয়া উচিত।

সূর্যমুখী চারা

2-3 সপ্তাহের মধ্যে গাছগুলি লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের বৃদ্ধি এবং গুণমানের পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠবে। প্রতিটি পাত্রে 2-3 টি অনুলিপিতে, শুধুমাত্র সবচেয়ে শক্তিশালী এবং শক্তিশালী ফসল ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং বাকিগুলি মূলে কেটে ফেলা উচিত।

চারাগুলির প্রধান যত্নের মধ্যে রয়েছে মাটির মৃদু আলগাকরণ এবং এর মাঝারি আর্দ্রতা। খোলা মাটিতে রোপণের আগে 10-15 দিনের জন্য চারা শক্ত করার পদ্ধতিগুলি সম্পাদন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা খোলা বাতাসে "হাঁটা" গাছগুলিকে শক্তিশালী হতে এবং নতুন নতুন জীবনযাপনের জন্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে। শর্তাবলী সূর্যমুখীকে ঘড়ির চারপাশে তাজা বাতাসে বেড়ে উঠতে শিখতে হবে প্রথম দিনগুলিতে, আপনাকে বাতাসের আকস্মিক দমকা এবং অপ্রত্যাশিত খসড়া থেকে ভঙ্গুর চারাগুলি রক্ষা করতে হবে।

মাটিতে সূর্যমুখী রোপণ করুন

কখন সূর্যমুখী রোপণ করা ভাল

একটি সূর্যমুখী রোপণ এবং এর যত্ন অনেক সময় এবং প্রচেষ্টা লাগে না। যে কোনও ফুল প্রেমী এটি পরিচালনা করতে পারে, এমনকি বহু বছরের ফুল চাষের অভিজ্ঞতা ছাড়াই।

পাকা চারা মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে বা জুনের প্রথমার্ধে ফুলের বাগানে বা খোলা বাগানে স্থানান্তর করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা হল ভাল-উষ্ণ পৃথিবী এবং স্থিতিশীল উষ্ণ আবহাওয়া।

রোপণের স্থানটি রৌদ্রোজ্জ্বল এবং খোলা হওয়া উচিত এবং সাইটের মাটি ক্ষারীয় বা নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। বাধ্যতামূলক মাটি উপাদান সূক্ষ্ম নুড়ি এবং মোটা নদী বালি হতে হবে। প্রস্তুতিমূলক খননের সময় যদি সাইটে দোআঁশ মাটি থাকে তবে এতে ডলোমাইট ময়দা যোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কিভাবে সঠিকভাবে উদ্ভিদ

অবতরণ গর্ত প্রস্তুত করার সময়, এটি মনে রাখা উচিত যে সূর্যমুখী খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।গাছের মধ্যে ব্যবধান 30-35 সেন্টিমিটারের কম হওয়া উচিত নয়। গর্তের গভীরতা এবং গাছের সাথে পাত্রের উচ্চতা প্রায় একই হওয়া উচিত। একটি পিট পাত্র একটি গর্তে স্থাপন করা হয়, মাটি দিয়ে ছিটিয়ে, জল দেওয়া হয়।

বাগানে সূর্যমুখী যত্ন

জল দেওয়া

সূর্যমুখী উচ্চ খরা প্রতিরোধের সাথে সমৃদ্ধ, তাই এটি সাধারণত তাদের নিয়মিত পতনের সাথে যথেষ্ট প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত হয়। বসন্ত এবং শরত্কালে ফুলগুলিকে জল দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না। গ্রীষ্মে, মাটি শুধুমাত্র দীর্ঘ সময়ের জন্য বৃষ্টি এবং উচ্চ বায়ু তাপমাত্রার দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে আর্দ্র হয়। সেচের জল পূর্বে একটি খোলা রৌদ্রোজ্জ্বল এলাকায় বসতি স্থাপন এবং উত্তপ্ত করা হয়। গ্রীষ্মকালীন জল প্রচুর।

মেঝে

প্রতিটি গাছের চারপাশে সময়মত মাটি আগাছা ও আলগা করে দিতে হবে। সাইটের মাল্চ স্তর আপনাকে এই পদ্ধতিগুলি থেকে মুক্তি দেবে এবং মাটিতে অতিরিক্ত পুষ্টি সরবরাহ করবে।

নিষিক্তকরণ

উর্বর মাটিতে সূর্যমুখী বাড়ানোর সময়, এটির কোনও অতিরিক্ত খাওয়ানোর প্রয়োজন হবে না। অন্যান্য ক্ষেত্রে, প্রয়োজন হিসাবে সার ব্যবহার করা হয়। ফুল ফোটার আগে, গাছগুলিকে তরল জৈব পদার্থ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মাটিতে অতিরিক্ত পুষ্টির ফলে পাতার ভর প্রচুর পরিমাণে জমা হবে, যা সক্রিয় ফুলের সাথে হস্তক্ষেপ করবে।

কাটা

আকর্ষণীয়তা বজায় রাখতে এবং সূর্যমুখীর উচ্চ আলংকারিকতা সংরক্ষণ করতে, শুকনো এবং বিবর্ণ কুঁড়িগুলি নিয়মিত ছাঁটাই করা হয়। বিবর্ণ অঙ্কুর (মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় 30%) অপসারণ করা আরও সক্রিয় এবং উজ্জ্বল ফুলের প্রচার করবে।

শীতকাল

কিছু প্রজাতি এবং গাছপালা খুব ঠান্ডা-প্রতিরোধী এবং শীতের জন্য কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। এটি কমলা এবং হলুদ ফুলের সাথে সূর্যমুখী প্রযোজ্য। বেশ কয়েক বছর ধরে, একটি অঞ্চলে সংস্কৃতির বিকাশ এবং বিকাশ ঘটে।কিন্তু রূপালী পাতা এবং লাল ফুলের বিভিন্ন ধরণের ফসল শুকনো ঘাস বা স্প্রুস শাখা দিয়ে আচ্ছাদিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়, অন্যথায় তারা তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচবে না।

সূর্যমুখী রোগ এবং কীটপতঙ্গ

একটি সম্ভাব্য রোগ হল শিকড় পচা, যা মাটিতে নিয়মিত অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে ঘটে। প্রভাবিত গাছপালা অবিলম্বে ধ্বংস করা উচিত, এবং অবশিষ্ট ফুল এবং সমগ্র এলাকা একটি ছত্রাকনাশক প্রস্তুতি (উদাহরণস্বরূপ, Fundazol) সঙ্গে চিকিত্সা করা উচিত।

প্রধান কীটপতঙ্গ হল থ্রিপস এবং এফিডস। তারা উদ্ভিদের রস খাওয়ায় এবং পুরো ফুলের বাগান ধ্বংস করতে সক্ষম। যে কোনও ফুলের দোকান এই অবাঞ্ছিত অতিথিদের মোকাবেলা করার জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রতিকার সরবরাহ করে।

সূর্যমুখীর প্রকার ও জাত

চাষে সূর্যমুখী প্রজাতির বিপুল সংখ্যক প্রজাতির মধ্যে শুধুমাত্র একটি ভগ্নাংশই চাষ করা হয়। ফুল প্রেমীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং চাহিদার নমুনা রয়েছে।

এপেনাইন সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম এপেনিনাম)

ঠান্ডা-প্রতিরোধী আধা-ঝোপঝাড় বহুবর্ষজীবী, গড় উচ্চতা - 25 সেমি, দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপে বিস্তৃত, সাদা ফুল, 1.5-2 সেমি ব্যাস, পাতা ল্যান্সোলেট, একটি পিউবেসেন্ট পৃষ্ঠ সহ।

আর্কটিক সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম আর্কটিকাম)

বহুবর্ষজীবী শুধুমাত্র মুরমানস্ক অঞ্চলে সাধারণ, তিন বা ছয়টি উজ্জ্বল হলুদ ফুলের ফুলে ফুল ফোটে, গুল্ম সাধারণত 40 সেন্টিমিটার উচ্চতা অতিক্রম করে না, বৃদ্ধির নিম্ন সীমা 10 সেমি।

পরিবর্তনশীল সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম পরিবর্তনযোগ্য)

ঠান্ডা-প্রতিরোধী বহুবর্ষজীবী, মে - জুন মাসে সাদা-গোলাপী ফুলের সাথে ফুল ফোটে। উচ্চতা - প্রায় 25 সেমি, ফুলের ব্যাস - 1.5-2 সেমি।

হাইব্রিড সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম x হাইব্রিডাম)

এটি বিভিন্ন প্রজাতি অতিক্রম করার সময় বাছাই কাজের ফলে প্রজনন করা হয়েছিল এবং সমস্ত নতুন ফর্ম এবং জাতগুলিকে একত্রিত করে।ফলস্বরূপ জাতগুলি পাতার আকার এবং ফুলের ছায়ায় পৃথক হয়। হাইব্রিড সূর্যমুখী লাল, কমলা, হলুদ, সাদা এবং গোলাপী ফুলের সাথে বাগান এবং ফুলের বিছানাকে শোভিত করে।

আলপাইন সূর্যমুখী (হেলিয়ানথেমাম অ্যালপেস্ট্রে)

তুষার-প্রতিরোধী নিম্ন-বর্ধমান বহুবর্ষজীবী, উচ্চতা 10 সেন্টিমিটারের বেশি নয়, ঘন বৃদ্ধি ঘনভাবে মাটিকে ঢেকে দেয়, ছোট পাঁচ-পাপড়িযুক্ত হলুদ ফুল দিয়ে ফুল ফোটে।

মনেট সানফ্লাওয়ার (হেলিয়ানথেমাম নিউমুলারিয়াম)

ভূমধ্যসাগরীয় বহুবর্ষজীবী আধা-ঝোপঝাড়, উচ্চতা - 45 সেন্টিমিটারের বেশি নয়, শক্তিশালী পুবসেন্স সহ শাখাযুক্ত কান্ড, পাতার উপরের অংশ সবুজ এবং নীচের অংশটি ধূসর, ডিম্বাকৃতির। এটি প্রায় 2 সেন্টিমিটার ব্যাসের সুন্দর কমলা-হলুদ ফুলের সাথে প্রস্ফুটিত হয়।